সিলেটে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে বানিয়াচংয়ের নারী র‍্যাবের হাতে আটক


তরফ বার্তা প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৬, ২০২২, ১০:১৪ অপরাহ্ন /
সিলেটে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে বানিয়াচংয়ের নারী র‍্যাবের হাতে আটক

জুয়েল চৌধুরী \ সিলেট শহরের শাহপরাণ থানাধীন বালুচর এলাকার ফোকাস ৩৬৪ নম্বর পাঁচতলা বাসা সিকান্দর মহলের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাটে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে দ্বন্ধে নারীর হাতে নারী খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় বানিয়াচং উপজেলার সারংপুর এলাকার আব্দুল গনির মেয়ে মাজেদা ওরফে মুন্নি (২৯) আটক করেছে র‌্যাব ৯ এর আভিযানিক দল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে তার নিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেন। পরে রাতে তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করে র‌্যাব ৯ এর মিডিয়া অফিসার আফসান আল আলম জানান। গত ২৩ আগষ্ট মঙ্গলবার আনুমানিক ১১টার সময় সিলেট শহরের শাহপরাণ থানাধীন বালুচর এলাকার ফোকাস ৩৬৪ নম্বর পাঁচতলা বাসা সিকান্দর মহলের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙ্গে আফিয়া বেগম ওরফে সামিহা (২৫) নামের এক সন্তানের জননী রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আফিয়া সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাঙ্গাইল গ্রামের আজর উদ্দিনের মেয়ে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।
এ ঘটনায় শাহপরাণ থানায় গত ২৪ আগস্ট আফিয়ার মা কুটিনা বেগম শাহাপরাণ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামালা দায়ের পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে র‌্যাব-৯ গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে বানিয়াচংয়ের মোছাঃ মাজেদা খাতুন ওরফে মুন্নি (২৯) হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯ এর একাধিক আভিযানিক দল উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান অভিযুক্ত মোছাঃ মাজেদ ওরফে মুন্নিকে তার নিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেন। মাজেদা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, নিহত আফিয়ার সাথে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে দ্ব›দ্ব ছিল। মাজেদা নিহত আফিয়ার বাসায় সাবলেট থাকতো কিন্তু মাজেদা মাসে ৫/৭ দিন ভিকটিমের বাসায় অবস্থান করতো। ঘাতক মাজেদা নিহত আফিয়ার নিকট বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা গচ্ছিত রাখতো।
মাজেদার পাওনা টাকা ভিকটিম আফিয়া দিতে অস্বীকার করে। ফলে মাজেদাও ভিকটিম আফিয়া ওরফে সামিহা কে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দুইদিন আগে মাজেদা গত ১৮ আগস্ট আফিয়ার বাসায় আসে। ঘটনার দিন ২০ আগস্ট আনুমান রাত ১০টায় নিহত আফিয়া এবং আসামী মাজেদার মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। ২১ আগস্ট দিবাগত রাত আনুমান ১২ টায় অকস্মাৎ মাজেদা বেগম রান্না ঘর থেকে শীল (পাটারশীল) নিয়ে আফিয়ার মাথার বাম পাশে পর পর ২টি সজোরে আঘাত করে। আঘাতের ফলে তৎক্ষনাত আফিয়া বিছানায় লুটিয়ে পড়ে। পরে ভোর অনুমান ৬টায় সে বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা ভাড়া করে নিয়ে আসে এবং বাসার দরজা বাহির থেকে তালা মেরে মাজেদার মালামাল ও আফিয়ার মোবাইল ফোন নিয়ে বানিয়াচং তার নিজ বাড়ীতে আতœগোপন করে। উক্ত ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে বাসায় আটকা পড়া অবস্থায় থাকা আফিয়ার প্রায় ২ বছর বয়সী মেয়ে বেঁচে যায়। পরে বিকেলে আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়। নিহতর মা কুটি বেগম জানান, বিগত ১১/১২ বছর পূর্বে আমার মেয়ে আফিয়া বেগম আমাদের সাথে আর্থিক অনটন নিয়া রাগারাগি করে সিলেট শহরে আসিয়া বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে কাজ করিত। গৃহকর্মী কাজ করাকালে জনৈক আশরাফ নামের একটি ব্যক্তির সহিত বিবাহ হয়। তারা শিবগঞ্জ, মজুমদার পাড়া এলাকায় বসবাস করতো।